বিংশ শতাব্দীর ঊষালগ্নে অবিভক্ত বাংলা একদিকে যেমন স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রাণকেন্দ্র ছিল, তেমনি শিক্ষা, সংস্কৃতি ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিতে অগ্রগণ্য রাজ্য হিসেবে বিবেচিত হত। ১৯০৫ বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলন থেকে স্বদেশী আন্দোলন বহুগুণ তরঙ্গায়িত হয়ে ব্রিটিশ বিরোধী অগ্নিগর্ভ বাংলাতে পরিণত হয়েছিল। ১৮৫৭ সালের সিপাহি বিদ্রোহের পর ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কাছ থেকে ব্রিটিশরাজের কাছে ভারতের ক্ষমতা হস্তান্তরিত হয়েছিল। ১৯১১ সালে বঙ্গভঙ্গ রদ হল বটে কিন্তু বাংলাকে শায়েস্তা করতে ব্রিটিশরা অভিনব উপায় অবলম্বন করল। ১২ই ডিসেম্বর ভারত সম্রাট হিসেবে পঞ্চম জর্জের অভিষেকের দিন কলকাতা থেকে রাজধানী দিল্লিতে স্থানান্তরের ঘোষণা হল। সেই সময় অবিভক্ত বাংলার ভারতের জাতীয় আয়ে অংশগ্রহণ ছিল ৪৪ শতাংশ, যদিও অবিভক্ত বাংলা বলতে বোঝাত পশ্চিমবঙ্গ, বাংলাদেশ, বিহার, উড়িষ্যা, ছত্রিশগড়ের কিছু অংশ এবং অসম।
স্বাধীনতা আন্দোলন থেকে কেবলমাত্র যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্টিত হয়নি, ডা: নীলরতন সরকার ন্যাশনাল ট্যানারি প্রতিষ্ঠা করেন, আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় বেঙ্গল কেমিক্যাল ও ফার্মাসিউটিক্যাল প্রতিষ্ঠা করলেন, স্যার রাজেন মুখার্জী এবং পুত্র বীরেণ মুখার্জীর হাত ধরে মার্টিন বার্ন ও ইসকো স্বমহিমায় বিকশিত হল।
১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীন হল। দেশ খন্ডিত হল, সঙ্গে সঙ্গে পাঞ্জাব ও বাংলা খন্ডিত হল। সদ্য স্বাধীন খন্ডিত ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জাতীয় আয়ে অংশগ্রহণ কমে দাঁড়াল ২৫ শতাংশ। কলকাতা, হাওড়ার ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প, হুগলীর উভয় তীরের পাটশিল্প ও কাপড় শিল্পের অবনমন অব্যাহত থাকল। সূর্য পূর্ব দিকে উদয় হয়, তাই সূর্যাস্তও পূর্বদিকে আগে ঘটল। ১৯৪৮ সালে পশ্চিমবঙ্গ শিল্পে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করল সম্মিলিত মহারাষ্ট্র ও গুজরাটের পরে। ব্রিটিশ উদ্যোগপতিরা দেশ ছাড়ল এবং বাঙালী উদ্যোগপতিরা ক্রমশ নিজভূমে পরবাসী হতে শুরু করল।
মেকলের মানসপুত্র হিসেবে বাঙালী কেরানিকুল সৃষ্টি হল। পাটশিল্প পশ্চিমবঙ্গে থাকল কিন্তু পাট চাষের বিস্তীর্ণ ক্ষেত্র পূর্ববঙ্গে থেকে গেল। ইঞ্জিনিয়ারিং, ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি আধুনিকরণের অভাবে এবং বহির্জগতের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে না পারার কারণে একে একে বন্ধ হতে শুরু করল। ১৯৪৮ থেকে ১৯৬৬ পর্যন্ত বাংলার ক্রমঅবনমন অব্যাহত থাকল।
২০১৫-২০২০ সলের মধ্যে চতুর্দশ অর্থকমিশনের সুপারিশ মেনে রাজ্যগুলি কেন্দ্র থেকে ৩২ শতাংশের পরিবর্তে ৪২ শতাংশ রাজস্ব পেল। এই সময় রাজ্যগুলি কেন্দ্র থেকে ৩৯.৪৮ লক্ষ কোটি টাকা পেয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ পেয়েছে ৭.২৬ শতাংশ অর্থাৎ ২,৮৭,৪৩৬ কোটি টাকা, যা ত্রয়োদশ অর্থকমিশনের বরাদ্দর দেড়গুণ। তা হলে রাজ্য সরকারকে এত ঋণ নিতে হচ্ছে কেন?
মৃতপ্রায় শিল্পের গহ্বর থেকে উগ্রবামপন্থী শ্রমিক আন্দোলন মাথা চাড়া দিল কিন্ত শিল্প মাথা চাড়া দিল না। দারিদ্রকে পুঁজি করতে গিয়ে রাজনীতি হল কিন্তু অর্থনীতি বিপর্যস্ত হল। স্বাধীনতার পর দুর্গাপুর, কল্যাণী শিল্পাঞ্চল বিধান রায়ের হাত ধরে নতুন উদ্যমে শুরু হতে না হতেই ১৯৬৭-র রক্তঝরা দিনের রাজনৈতিক অস্থিরতা পশ্চিমবঙ্গকে গ্রাস করল। যাদবপুর, শিবপুর ও খড়গপুরে ক্যাম্পাসিং বন্ধ হল। প্রথম যুক্তফ্রন্ট ও দ্বিতীয় যুক্তফ্রন্ট সরকারের অকাল বিদায় ঘটে কিন্তু শিল্পের পুনরুজ্জীবন অধরা থেকে যায়। ১৯৭১ বাংলাদেশের স্বাধীনতার ফসল হিসেবে উদ্বাস্তু স্রোত পশ্চিমবঙ্গের অর্থনীতিতে অতিরিক্ত চাপ সঞ্চার করল। এরপর এল সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায় মন্ত্রিসভার পাঁচবছর। ১৯৭৫ কলকাতার লাইফলাইন মেট্রোরেলের শিলান্যাস ঘটল। দ্বিতীয় হুগলী সেতুর কাজ শুরু হল কিন্তু রাজনৈতিক আস্ফালনে সমস্ত বিপর্যস্ত হল। ১৯৭৭ সালে কেন্দ্রে প্রথম অকংগ্রেসী সরকারের সঙ্গে সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গে বামফ্রন্ট ক্ষমতায় আসে। ১৯৮০ সালে জাতীয় আয়ে পশ্চিমবঙ্গের অংশগ্রহণ কমে দাঁড়ায় ৭.২ শতাংশ। ৩৪ বছরের বামশাসনের অবসান লগ্নে ২০১১ সালে জাতীয় আয়ে পশ্চিমবঙ্গের অংশগ্রহণ কমে দাঁড়ায় ৫ শতাংশে এবং সাড়ে নয় বছরের মা-মাটি-মানুষের সরকারের শেষে সেই অংশগ্রহণ কমে দাঁড়ায় মাত্র তিন শতাংশে।
সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়ের সরকার নকশাল মোকাবিলায় ভূমিসংস্কার আইন পাশ করে প্রারম্ভিক কাজ শুরু করলেও ভূমিসংস্কার বাম আমলে গতি পায়। কিন্তু পরবর্তী পর্যায়ে বর্গা অপারেশনের আড়ালে পার্টি অপারেশন চালু হয়। অর্থনৈতিকভাবে অসফল মাঝারি ও বৃহৎ সংস্থা বন্ধ করার মতো কোনও আইন ছিল না। ১৯৮৭ সালে সিকা (SICA)র মধ্যে দিয়ে বিআইএফআর (BIFR) নামক অর্ধ আইনি সংস্কার হতে প্রথমে বেসরকারি রুগ্ন প্রতিষ্ঠানের এবং ১৯৯১ সাল থেকে সরকারি রুগ্ন প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব দেওয়া হল। কিন্তু বিআইএফআর তা করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হল।
The sick Industrial Companies (Special Provision) Act, 2003 SICA-এর স্থলাভিশিক্ত হল, কিন্তু BIFR ও AAIFR বাতিল করল। NCIT ও NCLAT-কে আইনগতভাবে BFIR-এর দায়িত্ব দেওয়া হল কিন্তু শিল্পের পুনর্গঠন অধরা থেকে গেল।
শুধু কী শিল্প বা জাতীয় আয়ে পশ্চিমবঙ্গের অংশগ্রহণের ক্রমাবনতি? পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ঋণগ্রহণও মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ১৯৭৭ সালে বামফ্রন্ট সরকার ৪৪,০০০ কোটি টাকা ঋণের বোঝা নিয়ে ক্ষমতায় আসে। ৩৪ বছর শাসনের পর তা বেড়ে দাঁড়ায় ১,৯২,০০০ কোটি টাকায়, যার অর্থ ৩৪ বছরে ঘাটতি শূণ্য বাজেট মেটাতে ১,৪৮,০০০ কোটি টাকা ঋণ নেওয়া হয়েছিল। ২০২১ সালে মা-মাটি মানুষের সরকারের মোট ঋণ বৃ্দ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৪,৪৩,০০০ কোটি টাকা, অর্থাৎ ১০ বছরে সরকার চলছে বলে ২,৫০,০০০ কোটি টাকা ঋণ রাজ্যবাসীর কাঁধে চাপিয়েছে এই সরকার। ১০ কোটি রাজ্যবাসীর মাথাপিছু ঋণ দাঁড়িয়েছে ৪৪,০০০ টাকা। সত্যিই সরকার যমের দুয়ারে এনে দাঁড় করিয়েছে রাজ্যবাসীকে।
পশ্চিমবঙ্গে লক্ষ্মী-সরস্বতীর সহাবস্থান ছিল। ২০১৮ সালের পশ্চিমবঙ্গ মাথাপিছু আয়ে ২৩ তম রাজ্য, গোয়া প্রথম স্থানে। শিল্পবান্ধব পরিস্থিতিতে অন্ধ্রপ্রদেশ প্রথম স্থানে, পশ্চিমবঙ্গ উন্নয়নের বন্যায় নবম স্থানে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের সংখ্যার নিরিখেও প্রথম। ২০১০ সালের পর ৯৭ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের অধগতি অব্যাহত। ভারতের ৫২,৬৯,৮১৪ ক্ষুদ্র ও মাঝারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১১.৬২ শতাংশ প্রতিষ্ঠান পশ্চিমবঙ্গে অবস্থিত হওয়া সত্ত্বেও অধোগতি রুধিবে কে? ২০০১ সালে সিঙ্গুর থেকে টাটা মোটরকে বিদায় দেওয়ায় বুদ্ধিজীবীদের তারিফ করতে হয়। টাটা সিঙ্গুর থেকে অকালে বিদায় নেওয়াতে টাটা মোটরসের ক্ষতি হয়েছিল ১৪,০০ কোটি টাকা। টাটা মোটরে টাটার শেয়ার ১০ শতাংশ, ফলে টাটার ক্ষতি হয়েছিল ১৪০ কোটি টাকা কিন্তু সাধারণ শেয়ারগ্রহীতাদের ক্ষতি হয়েছিল ১,২৬০ কোটি টাকা। টাটা সিঙ্গুর ছাড়বার সঙ্গে সঙ্গে ৭,০০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ পশ্চিমবঙ্গ থেকে চলে যায়। অথচ, সাতবছর ‘Bengal Means Business’ করেও ১৪,০০০ কোটি টাকার মৌ স্বাক্ষরিত হবার প্রতিশ্রুতি হয়, কিন্তু ৫,০০০ কোটি টাকারও বিনিয়োগ আসে না।
পশ্চিমবঙ্গ ভারতের সেই উর্বর ভূমি, যেখানে ৩ শতাংশ উৎপাদনশীল জমিতে ৮ শতাংশ খাদ্য শস্য উৎপাদিত হয়। সপ্তদশ শতাব্দীতেই বাংলা দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার খাদ্যভান্ডার ছিল। আজও বাংলায় যথেষ্ট ধান, আলু উৎপাদিত হওয়া সত্ত্বেও চাষি ন্যায্য দাম পায় না। কৃষি বিপণনের জন্য অপ্রতুল কৃষক মান্ডি তৈরী হলেও কার্যকর হয় না। ই-ন্যামে আগ্রহ কম কারণ মধ্যসত্ত্ব ভোগীরা ক্ষতিগ্রস্থ হবে। ব্লকগুলিতে গ্রামোন্নয়নের অর্থের খরচের প্লাবন সত্ত্বেও পশ্চিমবঙ্গের বেশিরভাগ গ্রামের অবস্থার কোনও উন্নতি হয়নি কিন্তু কাটমানি ও তোলাবাজির ফলে রাজনৈতিক নেতাদের অবস্থার ভোল বদলে গেছে।
স্বাধীনতার পর থেকে জাতীয় আয়ে কৃষির অংশগ্রহণ কমেছে, শিল্পের অংশগ্রহণের তারতম্য ঘটেছে কিন্তু সেবাক্ষেত্রের অংশগ্রহণ ক্রমবর্ধমান। বামফ্রন্টের বিদায়ী স্লোগান ‘‘কৃষি আমাদের ভিত্তি, শিল্প আমাদের ভবিষ্যৎ’’-এর মধ্যে সেবাক্ষেত্র অনুচ্চারিত থেকেছে। বিশ্বব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান ম্যাকনামারা গো-ব্যাক করে সেবাক্ষেত্রের কফিনের শেষ পেরেক পুতেছিলেন জননেতা জ্যোতি বসু। জন হেনরির হাতুরির ঘায়ে ঘায়ে কমিউনিস্টদের বিদায়ের ফলে কলকাতার বদলে আইটি সেক্টর ব্যাঙ্গালুরু, হায়দরাবাদ, মহিশূর, গুরগাঁও ও দিল্লিতে নির্বাসন দিয়ে বামপন্থীরা দিবানিদ্রায় আচ্ছন্ন ছিল। বুদ্ধবাবুর যখন ঘুম ভাঙল তখন অনেক দেরী হয়ে গেছে। সেক্টর ফাইভ-এ তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা টিসিএস, ইনফোসিস, উইপ্রো, কগনিজেন্ট এল কিন্তু গুণমানে দ্বিতীয় বা তৃতীয় শ্রেণীর কাজ নিয়ে এল পশ্চিমবঙ্গে।

নকশালাইট সিঙ্গুর আন্দোলনে সরকার হল, কিন্তু সিঙ্গুরে কৃষি ও শিল্প উভয়ই মুখ থুবড়ে পড়ল। ভ্রান্তিবিলাস আন্দোলন কৃষকের রোষানল রোদন ধ্বনিতে পরিনত হল। তাই যাবার বেলা ‘কৃষিভিত্তিক শিল্পে’র ঢক্কানিনাদ বাজাতে হয়। রেশন ও সামান্য ভাতা সিঙ্গুরকে সেই তিমিরে রেখে দেয়।
ভারতের গড় সঞ্চয়ের হার থেকে পশ্চিমবঙ্গের গড় সঞ্চয়ের হার অনেক কম। মাথাপিছু আয় কম। ব্যাঙ্কগুলির ঋণপ্রদানের হারও তথৈবচ। স্বাধীনতার পূর্বে এমন কি স্বাধীনোত্তর পরিস্থিতিতে শিক্ষা-স্বাস্থ্য পরিষেবা পেতে ভিন রাজ্য থেকে মানুষ পশ্চিমবঙ্গে আসত। আজ বিপরীতমুখী প্রবাহ শুরু হয়েছে। ফলে বিনিয়োগ বহির্মুখী।
২০১৫-২০২০ সলের মধ্যে চতুর্দশ অর্থকমিশনের সুপারিশ মেনে রাজ্যগুলি কেন্দ্র থেকে ৩২ শতাংশের পরিবর্তে ৪২ শতাংশ রাজস্ব পেল। এই সময় রাজ্যগুলি কেন্দ্র থেকে ৩৯.৪৮ লক্ষ কোটি টাকা পেয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ পেয়েছে ৭.২৬ শতাংশ অর্থাৎ ২,৮৭,৪৩৬ কোটি টাকা, যা ত্রয়োদশ অর্থকমিশনের বরাদ্দর দেড়গুণ। তা হলে রাজ্য সরকারকে এত ঋণ নিতে হচ্ছে কেন?
অবিভক্ত ভারতের রাজধানী কলকাতা শিক্ষা, সংস্কৃতি ও অর্থনীতিতে অগ্রগণ্য রাজ্য ছিল। স্বাধীনোত্তর সময়ে বাংলার ভাগ্যাকাশে কালো মেঘ ক্রমশঃ ঘনীভূত হয়েছে। কংগ্রেস-বাম-তৃণমূল বাংলা তথা বাঙালীর আর্থিক সমৃদ্ধির দিকে না তাকানোয় শিক্ষা, অর্থনীতি উভয়ই বিপর্যস্ত হয়েছে। এহেন ঘোড়াকে রথের সামনে না জুড়ে, রথকে ঘোড়ার সামনে জুড়ে দেওয়া হয়েছে। ইউজেন বেয়ার ব্যঙ্গ করে বলেছিলেন, ‘‘ভাল অর্থনীতি হল খারাপ রাজনীতি আর খারাপ অর্থনীতি হল ভাল রাজনীতি।’’ রাজনৈতিক উত্তাপের বাতাবরণে অর্থনীতির সর্বনাশের খেলা থেকে আমাদের বেরোতে হবে। রাজনৈতিক বিরোধিতার নামে অর্থনীতির সর্বনাশের খেলা পশ্চিমবঙ্গকে বন্ধ করতেই হবে। রাজনৈতিক পরিবর্তন ঘটলে অর্থনীতির সর্বনাশের খেলা আমরা বন্ধ না করলে পশ্চিমবঙ্গের সর্বনাশ অনিবার্য। পরিকল্পনা যুক্ত কৃষি, শিল্প ও সেবাক্ষেত্রের সার্বিক পরিবেশ বান্ধব সুসংহত বিকাশ সুস্থ রাজনৈতিক বাতাবরণেই কেবলমাত্র সম্ভব। দুষ্টের দমন, শিষ্টের পালন থেকে সরকার যেন বিচ্যূত না হয়। সরকারি দলের আনুকূল্যে অসৎ ও দুর্বৃত্ত যেন মাথা চাড়া না দেয়, তা সরকারকেই দেখতে হবে। ‘‘Government must govern’’ পশ্চিমবঙ্গের হৃত গৌরব পুনরুদ্ধারের জন্য মগজাস্ত্রকে শান দিতে হবে- পশ্চিমবঙ্গ-সহ ভারত তথা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে বসবাসকারী বাঙালীরা যদি সেই আনন্দ যজ্ঞে সামিল না হন, তবে সেই স্বপ্ন অধরা থেকে যাবে। মুক্ত মনে সুস্থ রাজনৈতিক বাতাবরণে প্রজ্ঞাবান নেতৃত্বই কেবলমাত্র সেই কাঙ্খিত পরিবর্তন আনতে পারবে। মতাদর্শগত লড়াই চলুক, উন্নয়ন ইতিহাসের অতলে হারিয়ে যাবে। ইনক্লুসিভ স্থানীয় সম্পদের উপযুক্ত ব্যবহার দিশা দেখাক। সৎ ও কর্মক্ষম উৎকর্ষ নেতৃত্বের পক্ষেই সেই কাজ করা সম্ভব। আমরা ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে আছি।