২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের ‘খেলা হবে’ স্লোগান সুপার হিট ছিল সে বিষয়ে বোধহয় কারোর কোনও সন্দেহ নেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভাঙা পায়ে হুইল চেয়ারে বসে হাতে ফুটবল নিয়ে (কখনও তা মঞ্চের সামনের ভিড়ের উদ্দেশ্যে ছুড়ে দিচ্ছেন) প্রশ্ন করছেন- কী, খেলা হবে তো? রাজ্যের সর্বত্র তৃণমূলের কর্মীরা খেলা হবে স্লোগান তুলে ভোট প্রচারে ঝড় তুলছেন। এই খেলা হবে স্লোগান নিয়ে সে সময় প্রচুর সমালোচনাও হয়েছিল। কিন্তু নির্বাচনের ঘোষণার পর দেখা গেল সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে ২০০-র বেশী আসনে জিতে তৃতীয়বারের জন্য রাজ্যে ক্ষমতায় এল তৃণমূল কংগ্রেস।

এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লক্ষ্য ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচন। সেই নির্বাচনেও যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘খেলা হবে’ স্লোগানেই ভরসা রাখতে চলেছেন তা আজ ২১ জুলাইয়ে নিজের বক্তব্যে পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিলেন। এদিন ২১ জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে মমতা বলেন- খেলা একটা হয়েছে, আবার হবে। যতদিন বিজেপি-কে বিদায় করতে না পারি, রাজ্যে রাজ্যে খেলা হবে। সমস্ত জায়গায় খেলা হবে। ১৬ আগস্ট খেলা হবে দিবস হিসেবে পালিত হবে।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যে পরিষ্কার তিনি যে ‘খেলা’ রাজ্যে শুরু করেছিলেন, তা এবার গোটা দেশে ছড়িয়ে দিতে চান কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার লক্ষ্যে।

এরপরই কড়া প্রতিক্রিয়া জানাতে শুরু করে বিজেপি। ‘খেলা দিবস’-এর মধ্যে বিজেপি ‘দ্য গ্রেট ক্যালকাটা কিলিংস’-এর ছায়া দেখতে পাচ্ছে তারা। বিজেপি নেতা তথা রাজ্যসভার সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত ট্যুইটারে লেখেন, ‘‘মজার বিষয় হল, ১৬ আগস্টকে ‘খেলা দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। ১৯৪৬ সালে এই দিনটিতেই মুসলিম লিগ ‘ডাইরেক্ট অ্যাকশন ডে’ এবং ‘গ্রেট ক্যালকাটা কিলিংস’ শুরু করেছিল। আজকের পশিমবঙ্গে ‘খেলা হবে’ স্লোগানটি বিরোধীদের উপর হিংসাত্মক আক্রমণের প্রতিশব্দে পরিণত হয়েছে’’।

তবে তৃণমূল কংগ্রেসের বক্তব্য হল, ১৬ আগস্টকেই ‘খেলা দিবস’ হিসেবে বেছে নেওয়ার একটা গুরুত্বপূর্ণ কারণ রয়েছে। কারণ, ওই দিনটি ‘জাতীয় ফুটবলপ্রেমী দিবস’ হিসেবে পরিচিত। ১৯৮০ সালের এই দিনটিতে ইডেনে মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল ডার্বিকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায়। সেই উত্তেজনার বলি হয়েছিলেন ১৬ জন ফুটবলপ্রেমী। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সকল ফুটবলপ্রেমী মানুষদের সম্মান জানাতে ১৬ আগস্টকে ‘খেলা হবে দিবস’ হিসেবে বেছে নিয়েছেন।