ধর্মপ্রাণ হিন্দুদের কাছে তিনি মর্যাদা পুরুষোত্তম। ভগবানের সপ্তম অবতার। পৃথিবীতে আবির্ভূত হয়েছিলেন দুষ্টের দমন করতে, ধর্মপ্রতিষ্ঠার মহান কিন্তু কঠিন কর্তব্য  সম্পন্ন করতে। হিন্দুদের কাছে ত্রেতাযুগের রাম কিংবা দ্বাপর যুগের কৃষ্ণের আবির্ভাব- ভূমিকায় ব্যাখ্যা এমনই। আবার রাম শুধু ভারতবর্ষেই নয়, ভারতের পার্শ্ববর্তী  কিংবা দূরবর্তী বিস্তীর্ণ অঞ্চলে নানা কাহিনী, লোকগাথা, উপকথার এক অবিস্মরণীয় নায়ক। গোটা বিশ্বজগতের কাছে সুপ্রাচীন ভারতীয় সভ্যতার এক মহান অবদান হলেন রামচন্দ্র। ভারতের, বিশেষত আর্যাবর্তের মানুষদের কাছে তিনি সাক্ষাৎ ঈশ্বর। দিনের শুরু ও শেষ হয় রামের নাম দিয়েই। জীবনের শুরু ও শেষ রামের নাম দিয়ে। শিশু জন্মালে রামের নামে জয়ধ্বনি। মানুষের মৃত্যুর  পর শেষযাত্রায়ও রামের নাম। ভারতীয় হিন্দুর বিশেষত আর্যাবর্তের হিন্দুদের জীবনের প্রতিটি শ্বাসেই রয়েছেন রাম।

ফলে রামের জন্মস্থান পুনরুদ্ধারের জন্য ৫০০ বছরের জন্য লড়াই  চলবে এতে আশ্চর্য হওয়ার কারণ নেই। ১৫২৮-২৯ সালে বাবরের সেনাপতি মীর বাকী দ্বারা তৈরি করা বাবরি মসজিদ রামের জন্মস্থানে অবস্থিত মন্দির ভেঙেই তৈরি হয়েছিল, হিন্দুরা এ বিষয়ে নিশ্চিত ছিলেন। পরবর্তী কালের ঐতিহাসিক প্রমাণও এই ধারণাটিকেই জোরদার করে- যে কাঠামোর উপর মসজিদ স্থাপিত হয়েছিল সেখানে মন্দিরই ছিল। ভয়ঙ্কর হিংস্র এবং আগ্রাসী শক্তির হাত থেকে মন্দির রক্ষা করতে ব্যর্থ হলেও হিন্দুরা মন্দির পুনরুদ্ধারের দাবি থেকে সরে আসেনি ৫০০ বছর ধরে। বিশ্বে অন্য কোনও ধর্মস্থান পুনরুদ্ধারের আন্দোলন ৫০০ বছর ধরে চলেনি। সেই দিক দিয়ে রামমন্দির পুনরুদ্ধারের আন্দোলনও বিশ্বের ইতিহাসে অনন্য। প্রথম পর্যায়ে মুসলমান শাসকদের আমলে আন্দোলন, দ্বিতীয় পর্যায়ে ব্রিটিশ আমলে রামমন্দির পুনরুদ্ধারের আন্দোলন আর তৃতীয় পর্যায়ে স্বাধীন ভারতের তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষ ব্যবস্থার  মধ্যে রামজন্মভূমিতে মন্দির প্রতিষ্ঠার দাবিতে আন্দোলন। এই আন্দোলনের দীর্ঘ ইতিহাসের সমাপ্তি হয়েছে গত ৯ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের রায়ের মধ্য দিয়ে। সুপ্রিম কোর্ট সর্বসম্মতভাবেই রামমন্দির প্রতিষ্ঠার পক্ষেই রায় দিলেন। শেষ হল ইতিহাসের এক অধ্যায়। ৫ আগস্ট শুরু হল আরেক অধ্যায় রাম জন্মভূমিতে ভূমিপূজার মধ্য দিয়ে।||

সুপ্রিম কোর্টও তাদের রায়ে বাম ঐতিহাসিকদের যুক্তি বা ধারণাগুলিকে প্রত্যাখ্যান করেছে। তা সত্ত্বেও বাম ইতিহাসবিদ কিংবা রাজনীতিবিদগণ রামমন্দিরের বিরোধিতা থেকে সরে আসেননি। করোনার আবহে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর অযোধ্যায় রামমন্দিরের ভূমিপূজায় অংশ নেওয়া উচিত কিনা, ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রীরও আইসোলেশনে যাওয়া উচিত কিনা এরকম নানাবিধ যুক্তি দিয়ে গেছেন বামপন্থী বুদ্ধিজীবী এবং রাজনীতিকরা। সঙ্গে সমর্থক হিসেবে ছিলেন কংগ্রেস নেতৃত্ব যারা এখনও বৌদ্ধিক চিন্তার উপাদান নেন বামেদের কাছ থেকে। অনেকটা যেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভূমিপূজায় যাওয়া না যাওয়ার উপর তাদের জীবন মরণ নির্ভর করছিল।

অযোধ্যায় আজ থেকে ৪৯১ বছর আগে ধ্বংস হওয়া রামমন্দিরকে নতুন করে গড়ে তোলা ইতিহাসের গতিপথে এক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা সন্দেহ নেই। ভারতীয় সমাজ ও রাজনীতির উপর এর প্রভাব পড়বে এতেও কোনও সন্দেহের অবকাশ নেই। সেই প্রভাবের প্রকৃতি ও মাত্রা নিয়ে আগামীতে রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও ভাষ্যকারগণ ব্যস্ত থাকবেন। তবে এর আশু প্রতিক্রিয়া যে ভারতের রাজনৈতিক দলগুলিকে নাড়িয়ে দিচ্ছে তাতে কোনও সন্দেহ নেই। রামমন্দির আন্দোলনের সূত্রপাত থেকেই, বিশেষত ১৯৪৯ সালে বিতর্কিত কাঠামো রামলালার মূর্তি অধিষ্ঠিত হওয়ার সময় থেকেই ভারতের বামপন্থী দলগুলি এবং বাম ঐতিহাসিকগণ এই আন্দোলনের বিরোধিতা করে গেছেন। তাঁদের কাছে রাম নিতান্তই এক কাল্পনিক চরিত্র। রোমিলা থাপারের মতো বাম ঐতিহাসিক মনে করেন ‘বাবরি মসজিদ’ ভারতের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অঙ্গ। ইরফান হাবিব, রামশরণ শর্মা, এস. গোপাল, সুরজ ভান প্রমুখ বামপন্থী ঐতিহাসিকরা বার বার রামজন্মভূমি পুনরুদ্ধার আন্দোলন এবং এবং তার বিরোধিতাকে (যে বিরোধিতায় বামেরাই এগিয়ে) বিশ্বাসের সাথে যুক্তির লড়াই বলে চিহ্নিত করেছেন। এমন কি গত ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট রামমন্দির তৈরির পক্ষে রায় দিলেও   তাতে নিজেদের অসন্তুষ্টি তারা গোপন করেনি। রামমন্দির নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে তৈরি করা যুক্তি এবং ধারণাগুলো জনগণের বৃহত্তর অংশের কাছে আগেই বাতিল হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্টও তাদের রায়ে বাম ঐতিহাসিকদের যুক্তি বা ধারণাগুলিকে প্রত্যাখ্যান করেছে। তা সত্ত্বেও বাম ইতিহাসবিদ কিংবা রাজনীতিবিদগণ রামমন্দিরের বিরোধিতা থেকে সরে আসেননি। করোনার আবহে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর অযোধ্যায় রামমন্দিরের ভূমিপূজায় অংশ নেওয়া উচিত কিনা, ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রীরও আইসোলেশনে যাওয়া উচিত কিনা এরকম নানাবিধ যুক্তি দিয়ে গেছেন বামপন্থী বুদ্ধিজীবী এবং রাজনীতিকরা। সঙ্গে সমর্থক হিসেবে ছিলেন কংগ্রেস নেতৃত্ব যারা এখনও বৌদ্ধিক চিন্তার উপাদান নেন বামেদের কাছ থেকে। অনেকটা যেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভূমিপূজায় যাওয়া না যাওয়ার উপর তাদের জীবন মরণ নির্ভর করছিল। তবে প্রধানমন্ত্রী স্বাভাবিক কারণেই এদের খুশি করার দায় নেননি। তিনি অযোধ্যায় ভূমিপূজায় অংশ নিয়েছেন, ইতিহাসের এক প্রক্রিয়ার সামিল হয়েছেন। তারপর  থেকে বামপন্থীরা ভারতীয় ধর্মনিরপেক্ষতার আসন্ন সর্বনাশ নিয়ে খুবই চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। আপাতত বেশ কিছুদিন এ নিয়ে তাঁরা তাঁদের উদ্বেগ নানারূপে প্রকাশ করে যাবেন।

আরও পড়ুন: ভার্চুয়াল একুশে জুলাই, সাংগঠনিক অদলবদল : মমতা বুঝতে পারছেন ২০২১-এর লক্ষ্যপূরণ এবার কঠিন

তবে একটা কথা মানতেই হবে। বাম বুদ্ধিজীবী এবং রাজনীতিবিদগণ রামমন্দির নিয়ে তাঁদের অবস্থান বদল করেননি। এখনও তাঁরা রামমন্দির নির্মাণের বিরোধী। এখনও তাঁরা মনে করেন রাম লোককথার চরিত্র মাত্র। মানুষের আবেগের কোনও গুরুত্ব তাঁদের কাছে নেই। তবে রাজনৈতিক ডিগবাজির অদ্ভুত নিদর্শন রেখেছে ভারতের জাতীয় কংগ্রেস। এই দলের কিছু নেতা ভূমিপূজার দু’দিন আগে পর্যন্ত বাম বুদ্ধিজীবী এবং রাজনীতিবিদদের সঙ্গে সুরে সুর মিলিয়ে অযোধ্যার ভূমিপূজায় নরেন্দ্র মোদীর যাওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেই যাচ্ছিলেন। ভূমিপূজার ঠিক আগের রাতে প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর একটা ট্যুইটে যেন ৩৬০ ডিগ্রি উল্টো অবস্থান। প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর ট্যুইটে যেন এক পরম রামভক্তের ভক্তির প্রকাশ ঘটেছে প্রতিটি ছত্রে।

অনুষ্ঠানের ২৪ ঘণ্টা আগে উত্তরপ্রদেশের ভারপ্রাপ্ত কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী একটি ট্যুইটে লিখেছেন ‘রাম সবার সাথে আছেন’। আর একটি ট্যুইটে প্রিয়াঙ্কা লিখেছেন “দীনবন্ধু রামের অর্থ হল সাহস, সংযম, ত্যাগ, নিষ্ঠা… ভগবান রাম এবং সীতা মায়ের আশীর্বাদে রামলালার মন্দিরের এই ভূমিপূজন জাতীয় ঐক্য, ভ্রাতৃত্ব এবং সাংস্কৃতিক বন্ধনের উৎসব হয়ে উঠুক।” কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক রাম মন্দির নিয়ে এর আগে এত দীর্ঘ বক্তব্য রাখেননি। অবশ্য প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ট্যুইট করার আগেই এ বিষয়ে গৌরচন্দ্রিকা গেয়ে রেখেছিলেন গান্ধী পরিবারের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ দুই কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিং এবং কমল নাথ। দিগ্বিজয় সিং-এর কথায় ‘কয়েকশো বছরের লড়াইয়ের পর এমন দিন এসেছে’। আর কমলনাথের আবার এর জন্য প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীকে কৃতিত্ব দিয়েছেন। তাঁর কথায় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর জন্যই আজ মন্দির তৈরি সম্ভব হচ্ছে। স্পষ্টতই কমলনাথ ১৯৮৬ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী যে রাম মন্দিরের দরজা খুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন কমলনাথ সেই কথারই উল্লেখ করেন।

আসলে রামমন্দির বিষয়টি প্রথম থেকেই কংগ্রেসের কাছে খুব স্বস্তির বিষয় নয়। এটা সত্যি যে ১৯৮৬ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী ভক্তদের জন্য রামমন্দিরের দরজা খুলে দিয়েছিলেন। তবে তার ঠিক আগেই সেই সময়কার ফৈজাবাদ জেলা আদালত রামমন্দিরের দরজা ভক্তদের জন্য খুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। আর মৌলবাদীদের তুষ্ট করতে শাহবানু মামলায় সুপ্রিম কোর্টের ঐতিহাসিক রায়কে উল্টে দিতে রাহুল গান্ধী বিতর্কিত মুসলিম মহিলা বিল এনেছিলেন আর তাঁর এই তোষণের রাজনীতি দেখে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনসমাজ প্রবল ক্রোধে ফুঁসছিল। রাম মন্দিরের দরজা খুলে দিয়ে রাজীব তাদের ক্ষতে কিছুটা প্রলেপ দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। আর ১৯৮৮ সালে হিমাচল প্রদেশের পালামপুরে অনুষ্ঠিত ভারতীয় জনতা পার্টির ন্যাশনাল একজিকিউটিভের বৈঠকে প্রথম রামমন্দির আন্দোলনকে সমর্থন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তারপর থেকে বিজেপি একটানা এই আন্দোলনকে সমর্থন করেছে, রামমন্দির নির্মাণের বিষয়টি দলের নির্বাচনী ইস্তাহারে স্থান পেয়েছে। আজ রামমন্দির নির্মাণ শুরু হওয়ার পর আগামী নির্বাচনগুলোতে দল হিসেবে বিজেপি তার সুফল পাবেই। আর তাতে ভারতীয় রাজনীতির প্রান্তদেশের দিকে কংগ্রেসের যাত্রা অব্যাহত থাকবে।

রামমন্দির ইস্যু কংগ্রেসের কাছে কতটা গলার কাঁটা তা বোঝা যায় ২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্ট অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণের পক্ষে রায় দেওয়ায়। কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি এই রায়কে স্বাগত জানালেও এ বিষয়ে আর উচ্চবাচ্য করেনি। অথচ এই কংগ্রেসের অন্যতম শীর্ষ নেতা আইনজীবী কপিল সিব্বল ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের এজলাসে রামমন্দির সংক্রান্ত মামলায় জোরদার সওয়াল করেছিলেনে যে রামমন্দির মামলার রায়দান ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের পরেই করা হোক। কারণ, তার আগে রায় বেরোলে নির্বাচন প্রভাবিত হতে পারে। প্রসঙ্গত, কপিল সিব্বল আদালতে রামমন্দির তৈরির বিরোধী গোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব করছিলেন। কপিল সিব্বলের এই বক্তব্য বার বার আলোচনায় এসেছে, ভবিষ্যতেও আসবে। তাতে কংগ্রেসের অস্বস্তি আরও বাড়বে। আগামী কয়েকটি নির্বাচনে (বাংলা, বিহার, উত্তরপ্রদেশ)  এবং ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে রামমন্দির ইস্যু সামনে আসবে। এগুলিতে লাভের কড়ি বিজেপি ঘরে তুলতে পারে। কংগ্রেসের আম ছালা দুটোই যাওয়ার সম্ভাবনা। তাই বোনের দেখাদেখি দাদাও শেষ পর্যন্ত ভূমিপূজার আগে ট্যুইট করে ফেললেন। রাহুল গান্ধীর মতে ‘রামের অর্থ ভালোবাসা, ন্যায়বিচার।’ তার সাথে কেন্দ্রের শাসকদলকে তাঁর স্বভাবসিদ্ধ খোঁচা ‘অবিচার আর হিংস্রতায় তাঁর আবির্ভাব হয় না।’ কণ্ঠস্বর অনেকটা যেন রাজ্যপাট হারানো পরাজিত রাজার অক্ষম আক্রোশের বহিঃপ্রকাশ। কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব  জানে রাজ্যপাট (কংগ্রেসের ‘স্বাভাবিক’ নেতা গান্ধী পরিবারের আচার আচরণ, হাবভাব দেখে মনে হয় তারা এদেশের রাজা, বাকী জনসাধারণ সব ওদের প্রজা) যদি কোনওদিন কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসতে হয়, যার সম্ভাবনা অদূর ভবিষ্যতে নেই, চাঁদ সদাগরের মনসাপূজার মতো হলেও রামের স্মরণ নিতে হবে। অত:পর শ্রীশ্রী রামচন্দ্রশরণম।