দেশের অন্যান্য রাজ্যের মতো পশ্চিমবঙ্গেও দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে করোনার সংক্রমণ। বাড়ছে কোভিডে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা, মৃতের সংখ্যা। রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় করোনায় আক্রান্তদের জন্য ফের চালু হয়েছে ‘সেফ হোম’। এবার সেই ‘সেফ হোম’-এর বেহাল চিত্র সামনে চলে এল। উত্তর দিনাজপুরের ইটাহারের গটলু এলাকায় সরকারি ‘সেফ হোম’-এ অব্যবস্থার অভিযোগ তুলে মঙ্গলবার ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করলেন করোনায় আক্রান্ত রোগীরা।
গটলুর হোমগার্ড প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ‘সেফ হোম’ তৈরি করা হয়েছে। সেখানে এই মুহূর্তে অন্তত ৪০ জন করোনা রোগী ভর্তি রয়েছেন। সেখানে রোগীদের নিয়মিত পর্যবেক্ষণে রাখা তো দূরঅস্ত, ন্যূনতম স্বাস্থ্য ও পরিচ্ছন্নতা বিধিও পালন করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ তুলেছেন রোগীরা। তাই তারা বাধ্য হয়ে অসুস্থ অবস্থায়ও ‘সেফ হোম’ থেকে বেরিয়ে জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন। এই ‘সেফ হোম’-এ থাকা রোগীদের দাবি, অত্যন্ত নিম্নমানের খাবার পরিবেশন করা হচ্ছে সেফ হোমে। খাওয়ার জলের বোতলের নিচে শ্যাওলা জমে রয়েছে। এ নিয়ে স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের কাছে বার বার অভিযোগ জানিয়েও সুরাহা হয়নি। তাঁদের আরও বক্তব্য, সময় ধরে করোনা রোগীদের কী কী খাবার দেওয়া উচিত, তা ঠিক করে দিয়েছিল স্বাস্থ্য দফতর। কিন্তু এখানে তা মানা হচ্ছে না। উল্টোপাল্টা এবং অত্যন্ত নিম্নমানের খাবার দেওয়া হচ্ছে।
করোনা আক্রান্ত রোগীদের পথ অবরোধে এলাকায় আতঙ্ক ছড়ায়। গুরুত্বপূর্ণ ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শেষমেশ পথে নামতে হয় ইটাহার থানার পুলিশকে। সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়ে অবরোধকারী রোগীদের ফের ‘সেফ হোম’-এ ফেরত পাঠানো হয়।
তবে এই ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। তাঁদের অনেকের বক্তব্য, করোনায় আক্রান্ত রোগীরা শরীরিকভাবে তো বটেই, মানসিকভাবেও বিপর্যস্ত। এই অবস্থায় সরকারের আরএকটু যত্নবান হওয়া উচিত। নির্বাচনে কোটি কোটি টাকা খরচ হচ্ছে অথচ এই মহামারির পরিস্থিতিতে ন্যূনতম পরিষেবাটুকু ঠিকভাবে সরকার প্রদান করতে পারছে না।