আন্দোলনরত কৃষকদের মন জয় করতে বুধবার লোকসভায় নিজের জাবাবি ভাষণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কৃষক আন্দোলনকে ‘‘পবিত্র আন্দোলন’’ বলে উল্লেখ করলেন। তবে তিনি আন্দোলনরত নেতা, সমাজকর্মীদের ফের আরেকবার ‘‘আন্দোলনজীবী’’ বলে আক্রমণ করেন। তিনি বলেন, ‘‘আন্দোলনজীবীরা এই পবিত্র আন্দোলনকে অসম্মান করছেন।’’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কৃষকদের আন্দোলন একটি পবিত্র আন্দোলন। আমি খুব সতর্কভাবে কোনও শব্দচয়ন করি। কিন্তু ওখানে আন্দোলনজীবী মানুষরা আছেন, যারা কৃষকদের নিজেদের স্বার্থে কাজে লাগাচ্ছেন।

তিনি বলেন, আন্দোলনজীবীরা কৃষকদের লড়াই লড়তে গিয়ে দাঙ্গাবাজ, সন্ত্রাসবাদী, নকশাল যারা জেলে বন্দি আছে তাদের ছবি নিয়ে মুক্তির দাবি জানাচ্ছে। তাঁরা কি কৃষকদের আন্দোলনকে অসম্মান করছেন না?

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘‘আন্দোলন আমাদের গণতন্ত্রের পক্ষে জরুরি কিন্তু মানুষকে গণতন্ত্র এবং প্রকৃত আন্দোলনকারীদের মধ্যে তফাতটা বুঝতে হবে।’’ তিনি বলেন, ‘‘পাঞ্জাবে মোবাইল টাওয়ার ভাঙার কি কারণ ছিল? কৃষি আইনের সঙ্গে এর সম্পর্ক কোথায়?

তিনি বলেন, আমাদের দেশে এক শ্রেণীর মানুষ আছেন যাঁরা সবসময় ‘সঠিক জিনিস’ নিয়ে কথা বলেন, কিন্তু সঠিক কিছু করতে গেলে তাঁরা তার বিরোধিতা করেন।

সরকার বেসরকারিকরণের পথে গিয়ে দেশকে বিক্রি করে দিতে চাইছে, কংগ্রেসের এই অভিযোগেরও জবাব দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, পাবলিক সেক্টরগুলি জরুরি কিন্তু একসঙ্গে বেসরকারি ক্ষেত্রও গুরুত্বপূর্ণ।

.তিনি বলেন, টেলিকম, ফার্মাসিউটিক্যালস যে কোনও ক্ষেত্রের দিকে তাকালে দেখা যাবে বেসরকারি ক্ষেত্রগুলি কতটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। ভারত যদি মানবতার সেবা করতে সক্ষম হয়, তার পিছনেও কিন্তু বেসরকারি ক্ষেত্রগুলির ভূমিকা থাকে।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বেসরকারি উদ্যোগ না হলে দেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ কীভাবে তৈরি হবে? দেশ কি কেবল ‘বাবু’রাই চালাবে? আইএএস হওয়ার পর কি কেউ সার কারখানা তৈরি করবে? আইএএস হওয়ার পর কি কেউ রাসায়নিকের কারখানা তৈরি করবে? আইএএস হওয়ার পর কি কেউ উড়োজাহাজ চালাবে? ‘বাবু’রাই কেবল দেশ চালাবে? ‘বাবু’রা যেমন আমাদের দেশের নাগরিক তেমনি হাজার হাজার তরুণ, যুবকও আমাদের দেশের নাগরিক। ফলে বেসরকারি ক্ষেত্রের প্রতি আমাদের তরুণ প্রজন্মকে যত উৎসাহিত করা যায়, ততই তাদের মঙ্গল।