রাজ্যের সদ্য প্রাক্তন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে দড়ি টানাটানি চলছিল গত কয়েকদিন ধরে। যার জেরে রাজ্য ও কেন্দ্রের সংঘাত শুরু হয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবার এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা বন্ধ করতে চান। তিনি আর আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিষয়টি নিয়ে আর একটি শব্দও খরচ করতে চান না। বুধবার নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় চ্যাপ্টার ইজ ওভার।’’
কলাইকুন্ডায় ইয়াসের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর ডাকা বৈঠক ঘিরে শুরু হয় কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত। কেন্দ্রের তরফে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিল্লিতে রিপোর্ট করতে বলা হয়। কিন্তু আলাপন তা না করে অবসর নিয়ে নেন। এরপর কেন্দ্রকে কার্যত চ্যালেঞ্জ ছুড়ে মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে নিজের মুখ্য উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ করেন। কেন্দ্রের তরফে আলাপনকে শো-কজের নোটিস পাঠানো হয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন। কেন্দ্রের তরফেও জানানো হয় তারা আইন মোতাবেক পদক্ষেপ নিচ্ছেন। সব মিলিয়ে গত কয়েকদিন ধরে সংবাদমাধ্যমের মূল আলোচনার বিষয় ছিল আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যের সংঘাত। মুখ্যমন্ত্রী এদিন ‘ক্লোজড চ্যাপ্টার’ বলে দিলেও বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মহলে এখনও চর্চা অব্যাহত। রাজ্যে বর্তমান সময়ে কর্মরত এবং অবসরপ্রাপ্ত অনেক আমলাই প্রকাশ্যে এবিষয়ে কিছু না বললেও, ঘনিষ্ঠ মহলে তাঁরা বিষয়টি নিয়ে নিজেদের অসন্তোষের কথা ব্যক্ত করছেন। তাঁদের মতে রাজ্য ও কেন্দ্রের রাজনৈতিক দড়ি টানাটানিতে তাঁদের জড়ানো অনভ্রিপ্রেত।
বুধবার নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী জানান, দুই ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুরে ১৫ কোটি ম্যানগ্রোভ বসানো হবে। পাশাপাশি প্রশ্ন তোলেন, আমফানের সময় প্রচুর গাছ ভেঙেছে। সেই গাছ কোথায় গেল?
উল্লেখ্য, আমফানের পরও রাজ্য সরকার ৫ কোটি গাছ লাগিয়েছিল। এদিন মুখ্যমন্ত্রী নিজেই প্রশ্ন তুললেন, ম্যানগ্রোভ লাগানো হলেও কোথায় গেল? তিনি বলেন, অন্তত ১০ বছরের জন্য ঠিকাদারদের দায়িত্ব দিতে হবে। ভাঙন রুখতে ভেটিভার ঘাস লাগাতে হবে।
এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, দিঘায় কংক্রিটের পাথরও কেন ভেঙে গেল? বসার চেয়ার ভেঙে গিয়েছে। সমুদ্রের বোল্ডার নষ্ট হয়ে গিয়েছে। হকারদের দোকানগুলি আবার তৈরি করতে হবে। বর্ষার আগে চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিতে চাই। দিঘার সৌন্দর্যায়ন নষ্ট হয়ে গিয়েছে। সমুদ্রের কাছে হোটেল তৈরি করেছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রতিবছরই লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে বাঁধ সারাই হচ্ছে। আবার ভেঙে যাচ্ছে।
Comments are closed.