পশ্চিমবঙ্গে কোভিড পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। আর তার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রকে এবং নির্বাচন কমিশনকে কাঠগোড়ায় দাঁড় করাচ্ছেন। কিন্তু বাস্তব হল, মুখ্যমন্ত্রী নিজের দোষ ঢাকতেই কেন্দ্র এবং নির্বাচন কমিশনের দিকে আঙুল তুলছেন অথবা কেবলমাত্র রাজনীতি করতেই করোনা নিয়ে মানুষের মনে বিভ্রান্তি তৈরি করছেন। বুধবার একটি ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করে রাজ্য বিজেপি’র তরফে এরকমটাই দাবি করা হয়েছে।

রাজ্যে শেষ দফার ভোটগ্রহণ পর্ব শুরু হওয়ার আগের দিন, গত ১৯ এপ্রিল একটি বেসরকারি সংবাদ চ্যানেলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারের অংশ তুলে ধরে আক্রমণ শানিয়েছে বিজেপি। সাক্ষাৎকারের যে অংশটি বিজেপি’র তরফে প্রকাশ করা হয়েছে সেখানে সংবাদ চ্যানেলের সঞ্চালক মুখ্যমন্ত্রীকে করোনা নিয়ে প্রশ্ন করছেন। সঞ্চালক তথ্য দিয়ে বলছেন, রাজ্যে করোনায় মৃত্যু প্রায় ১০ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। তা শুনেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন- এটা ঠিক পরিসংখ্যান নয়। হতে পারে এটা গোটা দেশের পরিসংখ্যান। আমার মনে হচ্ছে কোথাও ব্যাপারটা গুলিয়ে যাচ্ছে। এমন কোনও তথ্য আমার কাছে নেই।

বাস্তব হল, ফেব্রুয়ারি মাসের গোড়ার দিকেই বাংলায় কোভিডে মৃত্যুর সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছিল। নির্বাচন কমিশনের তরফে তখনও বাংলায় ভোট ঘোষণা করা হয়নি। তখন সংবিধান অনুযায়ী মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রীও ছিলেন তিনি।

বিজেপির সর্বভারতীয় আইটি সেলের প্রধান এবং পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির অত্যতম পর্যবেক্ষক অমিত মালব্য বুধবার বলেন, মুখ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানেনই না বাংলায় কোভিড মৃত্যু ১০ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। দু’মাস আগে গত ২৭ ফেব্রুয়ারিই তা ১০ হাজারের থেকে অনেকটাই বেশি ছিল। অর্থাৎ তাঁর কোনও ধারণাই নেই বাংলায় কোভিড সংক্রমণের পরিস্থিতি কেমন!  মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে কি তিনি বাংলার কোভিড নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন?

বিজেপি নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, রাজ্যে করোনার সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর প্রথমে মৃতের সংখ্যা গোপন করা হচ্ছিল। বলা হচ্ছিল, কো-মর্বিডিটিতে মৃত্যু হয়েছে। পরে কখনও ফুলের বাজার খুলে দেওয়া হয়, কখনও মিষ্টির দোকান। লকডাউনও ঠিক মতো করা হয়নি। এর দায় তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই নিতে হবে। রাজীব আরও বলেন, ‘‘বাংলার করোনা পরিস্থিতি নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ধারাবাহিকভাবে মিথ্যা বলে গিয়েছেন। এখন মুখ্যমন্ত্রী যদি প্রকৃত পরিস্থিতি নিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করেন, তা হলে বাংলার মানুষ কীভাবে বুঝবেন যে কতটা ভয়ানকভাবে ছড়িয়েছে সংক্রমণ’’।