তৃতীয় বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার সকালে রাজভবনে অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে তাঁকে শপথ বাক্য পাঠ করান রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়।

তৃতীয় বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, তাঁর প্রথম কাজ হবে রাজ্যের কোভিড পরিস্থিতি মোকাবিলা করা। শপথ নেওয়ার পরে নবান্নে গিয়ে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। এরই পাশাপাশি রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কঠোর হাতে নিয়ন্ত্রণ করার অঙ্গীকার করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকেই রাজ্যে বিক্ষিপ্ত হিংসার ঘটনা ঘটছে। আমি সব রাজনৈতিক দলের কাছে আহ্বান করব শান্তির পরিবেশ বজায় রাখুন।’’

মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে শুভেচ্ছা জানিয়ে ট্যুইট করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি লেখেন, ‘পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেওয়ার জন্য মমতা দিদি’কে শুভেচ্ছা জানাই।’

এবারের পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা ভোটের দিকে নজর ছিল সকলের। তৃণমূল সরকারের পতন ঘটতে পারে এবং রাজ্যে ক্ষমতায় আসতে পারে বিজেপি এরকম একটা জল্পনা চলছিল। কিন্তু গত ২ মে ভোটের ফলাফল ঘোষণার পর সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় আসে তৃণমূল কংগ্রেস। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই বলেছিলেন, রাজ্যের করোনা পরিস্থিতিকে মাথায় রেখে কেবলমাত্র নিয়ম রক্ষার্থেই এবারে তাঁর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানটি হবে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক মনে হলে ২১ জুলাই ব্রিগেডে তাঁরা বড় করে বিজয় উৎসব পালন করবেন।

এদিন রাজভবনে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রশান্ত কিশোর, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, বিধানসভার প্রাক্তন অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শপথ বক্য পাঠের পর রাজ্যপাল বলেন, ‘‘তৃতীয় বারের জন্য সরকারে ফিরে আসা কম কথা নয়। আমি এজন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অভিনন্দন জানিয়েছি। তবে রাজ্যে যে হিংসার ঘটনা ঘটছে তা দ্রুত দমন করা উচিত। আশা করব মুখ্যমন্ত্রী তা করবেন। সেই সঙ্গে আক্রান্ত শিশু ও মহিলাদের কাছে দ্রুত ত্রাণ পৌঁছে দেবেন।’’ উল্লেখ্য মুখ্যমন্ত্রীর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের কিছুক্ষণ আগেই রাজ্যে নির্বাচন পরবর্তী হিংসার পরিস্থিতি নিয়ে ট্যুইট করেন রাজ্যপাল। ট্যুইটারে তিনি লেখেন, ‘‘গোটা রাজ্য থেকে যে হিংসার রিপোর্ট পাচ্ছি, তা নিয়ে আমি উদ্বিগ্ন। এই নিরর্থক হিংসা গণতন্ত্রের লজ্জা। আইনশৃঙ্খলার এই পতন মেনে নেওয়া যায় না।’’