ভিতু এজেন্টদের চেয়ে মাননীয়ার মাদ্রাসার ছেলে মেয়েদের অধিক পছন্দ। কারণ তারা অনেক বেশী প্রতিরোধ দিতে পারবে। হারমাদ-উর্মাদের থেকেও বেশী। কখনও কেন্দ্রীয় শাসক দল বিপদ বলে সংখ্যালঘু ভোটকে এককাট্টা করার চেষ্টা, আবার কখনও সংখ্যালঘু ভোট ভাগ হতে না দেবার আহ্বান জানিয়ে দেশের ধর্ম নিরপেক্ষতার আধারকে আঘাত করার চেষ্টা করছেন মাননীয়া। নির্বাচন কমিশন এই পরিপ্রেক্ষিতে জনপ্রতিনিধিত্ব আইন, ১৯৫১’র ১২৩ (৩), ৩ (এ) ধারা এবং আদর্শ নির্বাচন বিধির ১ নং অংশের ২, ৩ ও ৪ নম্বর অনুচ্ছেদ লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছেন মাননীয়ার বিরুদ্ধে।
বিরোধী দলগুলি প্রায়শই অভিযোগ করে থাকে, বাংলার বর্তমান শাসক দল সংখ্যালঘু তোষণে বেশী আগ্রহী। এটি অর্ধ সত্য। বাংলার বর্তমান শাসক দল সংখ্যালঘু তোষণ নয়, উগ্রপন্থী তোষণে বেশী আগ্রহী। ২০১১-১২ অর্থবর্ষ থেকে ২০১৯-২০ অর্থবর্ষ পর্যন্ত পরিকল্পনা বহির্ভূত খাতে খারিজি মাদ্রাসাগুলির (অনুমোদিত মাদ্রাসাগুলিকে)জন্য ৩৩৭৯.৩৩ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। অথচ ওই নির্দিষ্ট সময়ে সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত মাদ্রাসাগুলির জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে মাত্র ৮.১৮ কোটি টাকা। ফলত মাদ্রাসা শিক্ষক, শিক্ষা কর্মী এবং মাদ্রাসা বোর্ডের মধ্যেও অসন্তোষের আগুন ধুমায়িত হয়েছে। মমতাময়ী সরকার উগ্রপন্থার আঁতুড় ঘর খারিজি মাদ্রাসার জন্য রাজ্যের কোষাগার থেকে অর্থ বরাদ্দ করে প্রমাণ করে দিয়েছেন কীভাবে সরকারি অর্থ রাজ কোষাগার থেকে বের করে ইঁদুরের গর্তে পাঠানো যায়!
খারিজি মাদ্রাসাগুলি পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের সীমান্তবর্তী জেলা মুর্শিদাবাদ, মালদা, নদিয়া ও উত্তর দিনাজপুরের অধিকাংশ অনুমোদিত মাদ্রাসা সযত্নে উগ্রপন্থাকে লালন করছে এবং পশ্চিমবঙ্গকে বৃহত্তর বাংলাদশের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। গত ন’বছরে অনুমোদিত ও অঅনুমোদিত মাদ্রাসাগুলির জন্য সরকারি বরাদ্দ ৩,৮০০.৯৯ কোটি টাকা। যার সিংহভাগ অর্থাৎ ৩,৩৮৭.৫১ কোটি টাকা পরিকল্পনা বহির্ভূত খাত থেকে এবং ৪১৩.৪৮ কোটি টাকা পরিকল্পনা খাত থেকে খরচ করা হয়েছে। যা কখনও সরাসরিভাবে মাদ্রাসাগুলিকে আবার কখনও পঞ্চায়েত ও মাদ্রাসা শিক্ষাকেন্দ্রের মাধ্যমে বরাদ্দ করা হয়েছে। এখানেই শেষ নয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উন্নতি ও কল্যানের জন্য গত ন’বছরে ৪২.৪৮ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে।

সরকারি শপথ গ্রহণের সময় ধর্ম-বর্ণ যেকোনও রাজনৈতিক ভেদাভেদ না রেখে রাজ্য শাসনের অঙ্গীকার করতে হয়, যা বারবার এই রাজ্যে বর্তমান সময়ে লঙ্ঘিত হচ্ছে। আমরা দেখেছি আমেরিকা সরকারিভাবে তালিবান ও লাদেনের পক্ষে দাঁড়িয়ে সরকারি ও বেসরকারিভাবে সহায়তা করেছে। ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার ধ্বংস ও অন্যান্য উগ্রপন্থী কার্যকলাপের মাধ্যমে আমেরিকাকে তার মূল্য দিতে হয়েছে। ফ্র্যাঙ্কেনস্টাইন সৃষ্টি করে সৃষ্টিকর্তা বিজ্ঞানী নিজে রক্ষা পাননি। ইতিমধ্যে রাজ্যে খাগড়াগড়, বাদুরিয়া, বেড়াচাপা, ধুলাগড়, ডোমকল, করিমপুর প্রভৃতি অঞ্চলের খারিজি মাদ্রাসাগুলি উগ্রপন্থার আঁতুড় ঘরে পরিণত হয়েছে এবং এই তোষণনীতির ফল স্বরুপ সিমি, জেএমবি’র মতো উগ্রপন্থী সংস্থাগুলির স্লিপার সেলকে সক্রিয় করতে সাহায্য করেছে। আপাতভাবে কয়েকটি আসন বেশী পাওয়া যেতে পারে, দু’বার সরকার গড়াও সম্ভব হয়েছিল কিন্তু বাংলার আশু সর্বনাশ কেউ রোধ করতে পারবে না। তাই বলি, সাধু সাবধান!
Comments are closed.