“আজ যত যুদ্ধবাজ, দেয় হানা হামলাবাজ,
আমাদের শান্তি সুখ করতে চায় লুঠতরাজ।”
বহু বাঙালির মনেই দাগ কেটেছিল প্রকৃত যুদ্ধবিরোধী এই গানটি। কথা – শিবদাস বন্দ্যোপাধ্যায়, সুর- ভি. বালসারা, গেয়েছিলেন রুমা গুহঠাকুরতার পরিচালনায় ও নেতৃত্বে ক্যালকাটা ইয়ুথ কয়ারের শিল্পীরা। পরের জীবনে যেকোনও যুদ্ধকে ঘৃণা করতে শিখিয়েছিল এই গানটি।
আজকের খবর, শুধু “শান্তি সুখ” নয়, দানিশ সিদ্দিকিও “লুঠতরাজ” হয়ে গেলেন যুদ্ধের বলি হয়ে। সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের মাত্র ৪০ বছর বয়সী পুলিৎজার জেতা ভারতীয় চিত্রসাংবাদিক দানিশ সিদ্দিকি আফগানিস্তানের কান্দাহারের স্পিন বুলডাক জেলায় ক্রসফায়ারের মধ্যে পড়ে প্রাণ দিলেন। আফগান সরকারের সেনাবাহিনীর সঙ্গে তালিবানদের চলা “ঘমাসান” যুদ্ধের ছবি তুলছিলেন দানিশ, পেশা আর নেশার তাগিদে।
আলটুসি ফুল-চাঁদ-তারা-আকাশের ছবি নয়, দানিশের ক্যামেরায় ধরা পড়ত একটা নেকড়ের মতো নিষ্ঠুর সময়, যা ধরতে দম লাগত। যা তাঁকে ক্যামেরা হাতে নিয়ে গিয়েছিল মসুলের যুদ্ধের, নেপালের ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতির, রোহিঙ্গাউত্তর শরণার্থী সমস্যার, হংকং বিক্ষোভের, দিল্লি দাঙ্গার আর কোভিডে মৃত্যুর ভয়াবহতার চরিত্র সন্ধানে।
সেই দম রাখায় ঝুঁকি তো ছিলই। পেশার চেয়েও বেশী নেশার তাগিদে হরবখত সেই ঝুঁকি নিতেন দানিশ। সেই ঝুঁকিই হয়ত ঘাতক হয়ে গেল মুম্বাইতে বেড়ে ওঠা আর দিল্লিতে পড়াশুনা শেষ করা দানিশের জন্য।
দানিশের তোলা ছবিতেই দানিশকে কুর্ণিশ, সঙ্গে তাঁর তোলা ১০টি অত্যন্ত শক্তিশালী ছবি। যেগুলো কেবলমাত্র ছবি নয় একটা ভয়ঙ্কর সময়ে দাঁড়িয়ে সেই সময়টার দলিল।
১। রোহিঙ্গা সংকট

২। জামিয়ায় গুলি চালানোর ঘটনা

৩। রক্তের জন্য

৪। কৃষক আন্দোলন

৫। অক্সিজেনের জন্য লড়াই

৬। পরিযায়ী সমস্যা

৭। স্মরণে

৮। পবিত্র জল এবং আশীর্বাদী ছাই

৯। মানব পিরামিড

১০। বিরোধ স্থল

Comments are closed.