এআর রহমানকেও কাজ পেতে বাধা দিচ্ছে বলিউডি গ্যাং! এও সম্ভব! আমরা যারা মুখিয়ে থাকি ছবির টাইটেল কার্ডে সুরকারের জায়গায় রহমানের নাম দেখব বলে তাদের এই প্রশ্ন ছিল যে, রহমান হিন্দি ছবিতে এত কম কাজ করছেন কেন? ব্যস্ততা, বিদেশের কাজ, পৃথিবীজোড়া ট্যুর এইসব কারণ সাজিয়ে নিজের কৌতূহল নিরসন করেছি। সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারটি এই ধোঁয়াশার পর্দা সরিয়ে দিল। মুকেশ ছাবড়ার ‘দিল বেচারা’ ছবির সুরকার তিনি। মুকেশের সঙ্গে কথা বলে তিনি বুঝতে পেরেছেন মুম্বাইয়ে তার কাজ না পাওয়ার আসল অন্তরায় হল একটি ‘গ্যাং’, যারা রটিয়ে বেড়াচ্ছে যে ‘এআর রহমানের কাছে যেও না, তিনি রাজি হবেন না কাজ করতে’। অথচ বিদেশে কাজ করার সঙ্গে সঙ্গে তিনি দক্ষিণী ছবিতে কাজ করছেন নিয়মিত। তাঁর সুরে কত কত দক্ষিণী গান আসছে। হিন্দি ছবিতে অনেকদিন তাঁর কোনও কাজ নেই! হিন্দি ছবি মানেই সেই একই পাঞ্জাবি বিটসের গান আর নয়তো র্যাপ । মেলোডিয়াস গানের অভাব যত বেড়েছে শ্রোতারা রহমানকে মিস করেছেন মনে মনে।
রহমান দু’দিনের মধ্যে কিছু গানের সুর মুকেশ ছাবড়াকে পাঠিয়ে দেন ‘দিল বেচারা’ ছবির জন্য। মুকেশই ওঁকে জানিয়েছিলেন যে কিছু মানুষ তাঁকে বাধা দিয়েছিলেন রহমানের কাছে পৌঁছনোর পথে। তারপরই রহমান বুঝতে পারেন হিন্দি ছবিতে কাজ না পাওয়ার পেছনে এই লোকগুলিরই অবদান রয়েছে। তিনি ঈশ্বর বিশ্বাসী মানুষ, তাই ঈশ্বরকে স্মরণ করে তিনি বলেছেন ঈশ্বরের ইচ্ছাতেই সব ঘটছে, সব ঘটে থাকে, ছবির গানে সুর দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য কাজগুলো তিনি করে যাচ্ছেন একাগ্রতার সঙ্গে। গত বছর অক্টোবর মাসে তিনি প্রথমবার একটি মিউজিক্যাল ছবি প্রযোজনা করেছেন – ‘৯৯ সঙ্গস’।
রহমানের বক্তব্য পড়ে শেখর কাপুর আজ তাঁর উদ্দেশ্যে ট্যুইট করে বলেছেন যে, ‘‘আসল সমস্যা কি বলতো? তুমি অস্কার পেয়েছ। অস্কার পাওয়া মানেই হল বলিউডে তোমার প্রতিভার অপমৃত্যু ঘটে যাওয়া। অর্থাৎ তোমার প্রতিভা এত অগাধ যে বলিউড তা সামলাতে পারবে না”। এই ট্যুইটের উত্তরে রহমান লিখেছেন, ‘‘হারিয়ে যাওয়া পয়সা ফিরে আসে, খ্যাতিও ফিরে আসে কিন্তু চলে যাওয়া মূল্যবান সময় ফিরে আসে না। শান্তি! এগিয়ে চলো। আরও বড়ো বড়ো কাজ বাকি আছে যা করতে হবে।”
২০০৯ সালে ‘স্লামডগ মিলিওনিয়র’ ছবির জন্য আল্লারাখা রহমান দুটি অস্কার পেয়েছিলেন। অস্কার পাওয়ার পর থেকেই কি রহমানের কাজ পাওয়ার ক্ষেত্রটি সংকীর্ণ করে দেওয়ার চেষ্টা চলছে? মিথ্যে গুজব, রটনা রটিয়ে বলিউডে তাঁর কাজের পথে অন্তরায় হতে চাইছে কারা? রহমানের এই দশা হলে তো অন্যান্য অনেক লো প্রোফাইল প্রতিভাবানদেরকেও এইভাবে কোণঠাসা করে রাখা হয়! রহমান চিরকালই কম কথা বলেন, তাঁর কাজই তাঁর হয়ে কথা বলে। প্রচার বিমুখ, প্রতিভাশালী, সৃষ্টিমগ্ন মানুষের নামে বাজে কথা রটিয়ে যাদের স্বার্থ সিদ্ধি হচ্ছে তারা কি আদৌ শিল্পী নাকি মাফিয়া?