কলকাতার ঐতিহ্যবাহী নন্দনে সোমবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) শেষ হল ‘দ্বিতীয় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসব, কলকাতা ২০১৯’। তিনদিনব্যাপী এই চলচ্চিত্র উৎসবে বাংলাদেশের সমাজচিত্র, মুক্তিযুদ্ধ, রাজনীতি ও বঙ্গবন্ধুর জীবনালেখ্যের ওপর তথ্যচিত্র-সহ ২৩টি ছবি প্রদর্শিত হয়েছে নন্দন-২, নন্দন-৩ এবং নজরুল তীর্থ প্রেক্ষাগৃহে। এই চলচ্চিত্র উৎসব নিয়ে কলকাতার চলচ্চিত্রপ্রেমীদের আগ্রহ ছিল চোখে পড়ার মতো। অনেকেই বাংলাদেশের চলচ্চিত্র আরও বেশী করে দেখার ইচ্ছা পোষণ করেন।

বাংলাদেশের তথ্য মন্ত্রকের উদ্যোগে এবং কলকাতাস্থিত বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনের সহযোগিতায় এ উৎসব গত ১৫ ফেব্রুয়ারি নন্দন-২ এ উদ্বোধন করেন বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, এমপি। উৎসবে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক গৌতম ঘোষ ও দিল্লী’র আইসিসিআর-এর মহাপরিচালক রিভা গাঙ্গুলী দাস। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন উপ-হাইকমিশনের প্রথম সচিব (প্রেস) মোঃ মোফাকখারুল ইকবাল এবং শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন উপ-হাইকমিশনার তৌফিক হাসান।

এছাড়া অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের তথ্য মন্ত্রকের অতিরিক্ত সচিব (চলচ্চিত্র ও প্রশাসন) মোঃ মিজান-উল-আলম, চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক লক্ষণ চন্দ্র দেবনাথ, চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের ভাইস-চেয়ারম্যান নিজামুল কবীর এবং বাংলাদেশ ও কলকাতায় বিশেষ জনপ্রিয় চলচ্চিত্র অভিনেতা ফেরদৌস আহমেদ ও জয়া আহসান। উপস্থিত ছিলেন তারকা শিল্পী রিয়াজ, অপু বিশ্বাস ও তারিন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. হাছান মাহমুদ বলেন- সাম্প্রদায়িক শক্তি ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্কে চিড় ধরানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে। কিন্তু দুই দেশের সম্পর্ক অত্যন্ত মজবুত। তিনি বলেন, ভাষা এবং কৃষ্টির কারণে পশ্চিমবঙ্গের সাথে আমাদের সম্পর্ক আরও গভীর। মন্ত্রী আরও বলেন, ইউরোপের অনেক দেশে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড এক সাথে ভিন্ন ভিন্ন দেশ থেকে শুরু হয়। আমাদেরও আশে-পাশের দেশের সাথে এ ধরনের সংস্কৃতি গড়ে তোলা উচিত। আইসিসিআর-এর মহাপরিচালক রিভা গাঙ্গুলী দাস যিনি অচিরেই বাংলাদেশে ভারতের হাইকমিশনার হিসেবে যোগদান করবেন। তিনি বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশের চলচ্চিত্র নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের জনগণের এত আগ্রহ আমাকে মুগ্ধ করেছে। বাংলাদেশের মানুষও ভারতের চলচ্চিত্র পছন্দ করে তাই আমি চেষ্টা করব বাংলাদেশেও এ ধরনের চলচ্চিত্র উৎসব আয়োজন করার।

উদ্বোধনী পর্বে ‘আমাদের বঙ্গবন্ধু’ প্রামাণ্য চিত্রটি প্রদর্শিত হয়। চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত বাকি ছবিগুলো হল- পুত্র, পোস্টমাস্টার ৭১, স্বপ্নজাল, দহন, রাজনীতি, হেডমাস্টার, জীবনঢুলি, নেকাব্বরের মহাপ্রয়াণ, ঘেটুপুত্র কমলা, নুরু মিয়া ও তার বিউটি ড্রাইভার, গহীন বালুচর, আলফা, জান্নাত, জন্মভূমি, রাজপুত্র, পাঠশালা, সনাতন গল্প, মহুয়া সুন্দরী, জাগে প্রাণ পতাকায় জাতীয় সঙ্গীতে, খাঁচা, গেরিলা এবং চিত্রা নদীর পাড়ে।