অধুনা রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যের দড়ি টানাটানির ফলাফল কি হয় সেদিকে নজর ছিল সকলের। সোমবার পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয় সেদিকে সকাল থেকেই নজর ছিল সংবাদমাধ্যমের।

গত শুক্রবার (২৮ মে) দিল্লি থেকে বদলির নির্দেশ আসে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। কেন্দ্রের তরফে সরাসরি আলাপনকেই চিঠি পাঠানো হয়েছিল। তখন থেকেই আলাপনকে কেন্দ্র করে রাজ্য ও কেন্দ্রের মধ্যে নতুন করে সংঘাত শুরু হয়। এরপর রাজ্যের তরফে একাধিকবার কেন্দ্রকে চিঠি দিয়ে জানানো হয় তারা আলাপনবাবুকে ছাড়তে রাজি নয়। কিন্তু কেন্দ্র সেই আর্জি প্রত্যাক্ষান করে এবং নিজেদের সিদ্ধান্তে অবিচল থাকে। এই বিষয়টি নিয়ে যুক্তি, পাল্টা যুক্তি সামনে এসেছে। অবশেষে সোমবার সকালে নবান্নে পৌঁছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেন আলাপন। তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে বলেন সরকারি চাকরি থেকে তিনি অবসর নিতে চান। এদিন বিকেলে নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সকালে আলাপন তাঁকে নিজেই বলেছিলেন- ‘‘ম্যাডাম আমাকে অবসর নেওয়ার অনুমতি দিন।’’

সেই আর্জি মেনেই রাজ্যের মুখ্যসচিবের পদ থেকে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে অবসর নেওয়ার অনুমতি দেন মুখ্যমন্ত্রী। তার পরই মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ করা হল আলাপনকে। মঙ্গলবার থেকেই তিনি নতুন দায়িত্বে যোগ দিচ্ছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় সাহসের পরিচয় দিয়েছেন। তিনি দিল্লির দ্বিতীয় চিঠি আসার আগেই অবসর নিয়েছেন। ইতিহাসে তাঁর নাম লেখা থাকবে। তিনি এতদিন ধরে দেশের হয়ে কাজ করেছেন, অবসরের মুহূর্তে এসে তাঁর সঙ্গে যা করা হল, তা ঠিক নয়। আমি বলেছি, তাঁর অবসরের সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত বিষয়। আমি সেই সিদ্ধান্তকে সম্মান করি। কিন্তু এই লড়াই থেকে তাঁকে আমরা ছাড়ছি না। তিনি আমাদের সঙ্গে কাজ করবেন। তিন মাস নয়। তিন বছর।’’

সোমবারই রাজ্যের মুখ্যসচিব হিসেবে কর্মজীবনের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল আলাপনের। গত ১০ মে তাঁর মেয়াদ আরও তিন মাস বৃদ্ধির জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আবেদন করেছিল রাজ্য। রাজ্যের সেই আবেদনে অনুমতি দিয়ে ২৪ মে চিঠি পাঠায় কেন্দ্র। কিন্তু গত শুক্রবারই দিল্লি থেকে বদলির নির্দেশ আসে আলাপনের কাছে।

আলাপনের জায়গায় রাজ্যের নতুন মুখ্যসচিব হলেন হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। অন্য দিকে, রাজ্যের নতুন স্বরাষ্ট্রসচিব হলেন বীপী গোপালিকা। হরিকৃষ্ণ এর আগে ছিলেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব এবং বীপী গোপালিকা ছিলেন প্রাণিসম্পদ বিকাশ ও প্রশাসন কর্মিবর্গ দফতরের অতিরিক্ত সচিব।