বেসরকারি অর্থলগ্নীকারী সংস্থা রোজভ্যালি নিয়ে বিক্ষোভ ক্রমশ দেশের নানা প্রান্তে দানা বাঁধতে শুরু করেছে। রোজভ্যালি যেভাবে দ্রুত গোটা দেশে তাদের সাম্রাজ্য বিস্তার করেছিল, ঠিক সেভাবেই দেশের বিভিন্ন প্রদেশে ক্ষোভে ফেটে পড়ছেন রোজভ্যালির আমানতকারী, এজেন্টরা।
রোজভ্যালি নিয়ে তদন্ত চলছে এবং রোজভ্যালি কর্তা গৌতম কুন্ডু ও বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তিরা জেলে রয়েছেন। কিন্তু দীর্ঘ তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে এই সংস্থার আমানতকারী, এজেন্টদের ধৈর্যর বাঁধ ভেঙ্গেছে। আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা। এই মুহূর্তে তাঁদের পরিষ্কার বক্তব্য- তদন্ত হয়ত নির্দিষ্ট পথে এগোচ্ছে, কিন্তু প্রশাসনের উচিত অবিলম্বে হাজার হাজার গরীব অসহায় আমানতকারীর টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা।
দিল্লির যন্তরমন্তরের সামনে ৬-৮ ফেব্রুয়ারি ধর্নায় বসেছিলেন ১৫টি রাজ্য থেকে আসা প্রায় ৫০০০ জন রোজভ্যালি এজেন্ট, আমানতকারী। এই ধর্না কর্মসূচির নেতৃত্বে রয়েছেন, বিহারের খগড়িয়া জেলার রনবিজয় রোশন। ‘বিতর্ক’কে রনবিজয় রোশন বলেন, রোজভ্যালি নিয়ে আলোচনায় সাধারণত পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, অসম, ওড়িশা’র আমানতকারীদের কথা ওঠে। কিন্তু এই কটি রাজ্য বাদেও বহুরাজ্যে এই আর্থিক সংস্থার কর্মকান্ড ছড়িয়ে ছিল। সেখানকার হাজার হাজার মানুষ নিজেদের সঞ্চয় জমা রেখেছিলেন এই অর্থলগ্নি সংস্থায়। তিনি বলেন, বিহারে রোজভ্যালির আমানতকারীর সংখ্যা প্রায় ৩০ লক্ষ, ছোট-বড় এজেন্ট-এর সংখ্যা প্রায় ৭০ হাজার, রোজভ্যালির ৭৪টি শাখা কার্যালয় বিহারের নানা প্রান্তে গড়ে উঠেছে। বিহারের প্রত্যন্ত অঞ্চলের গরীব মানুষগুলো এই অর্থলগ্নী সংস্থায় টাকা রেখে এখন সর্বস্বান্ত। মাঝেমধ্যেই আত্মহত্যার খবর আসছে। প্রশাসনের এখন উচিত রোজভ্যালির আমানতকারীদের টাকা দ্রুত ফেরানোর ব্যবস্থা করা এবং এজেন্টদের হেনস্থা বন্ধ করা। ২০১৬-র শেষে বিহার থেকে কয়েকশো মানুষ কলকাতায় রোজভ্যালির প্রধান কার্যালয়ে এসে বিক্ষোভ দেখিয়ে, কার্যালয় বন্ধ করে দিয়েছিল। রনবিজয় রোশন ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে জানান, তাঁরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়েছিলেন এবং দেখা করে সমস্যার কথা জানাতে চেয়েছিলেন, কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তরফে কোনও জবাব মেলেনি। তাঁরা বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) কেন্দ্রীয় অর্থপ্রতিমন্ত্রী অর্জুন রাম মেঘওয়ালের সঙ্গে দেখা করেন। যাতে দ্রুত রোজভ্যালির আমানতকারীদের টাকা ফেরতের ব্যবস্থা করা হয়, তারজন্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে তাঁরা আবেদন জানান। না হলে আত্মহত্যার মিছিল শুরু হবে বলেও তাঁরা জানিয়েছেন।